বাংলাদেশ টেলিভিশনের রিপোর্টার নার্গিস জুঁইকে হত্যার উদ্দ্যেশে বাসায় আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী সৈয়দ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে। বাসুরদের ফ্ল্যাট লিখে না দেয়ায় বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার ৩/১৩ /বি, প্রতাপ দাস লেনের বাড়িতে জুঁইয়ের বাসুর ও শশুর বাড়ির লোকদের প্রত্যক্ষ ইন্দনে এ ঘটনা ঘটে বলে জুঁই অভিযোগ করেছেন।
ঘটনার সময় ৯৯৯ কল করলে সূত্রাপুর পুলিশ এসে তালা খুলে তাকে উদ্ধার করে। গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়ে রাতে জুঁই বাসায় ফেরেন। তিনি এখনও আতঙ্ক অবস্থায় দিন পার করছেন। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এই হামলা পূর্ব পরিকল্পিত।
এর আগে ২০২০ সালে বাসায় তালাবদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা ও অবরুদ্ধ করে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন জুঁই। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে তালা খুলে তাকে মুক্ত করে। জুঁই অভিযোগ করেন, ঢাকা মহানগরের সূত্রাপুর থানার শিংটোলার ৩/১৩/বি, বাড়ীর (৭ তলা) ২য় ও ৩য় তলার দুটি ফ্লাট বাংলাদেশ টেলিভিশনের রিপোর্টার নার্গিস জুঁই এর বাবার টাকায় ক্রয় করা হয়েছিল।
এই ফ্লাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার ভাসুর সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন ও সৈয়দ মনজুর হোসেন গংদের সাথে নার্গিস জুঁই এর সাথে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ীর ৩য় তলার ফ্লাটে বাসুরদের প্রত্যাক্ষ ইন্দনে জুঁইয়ের উপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়। এ বিষয়ে জুঁই মামলা করতে গেছে স্থানীয় কাউন্সিলর বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দিলে আর মামলা হয়নি।
জুঁই জানান, এর আগেও বাসায় তালা ঝুলিয়ে, সাদা গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে শশুর বাড়ির লোকজন পরবর্তীতে ফ্লাটের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। খবর পেয়ে সূত্রাপুর থানার এসআই সুব্রত কুমার সিং সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে তালা খোলে সাংবাদিক পরিবারকে তখন মুক্ত করে।
খবর পেয়ে সূত্রাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ও মহানগর দক্ষিণ সিটি কপোরেশনের ৪৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: আরিফ হোসেন ছোটন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ফ্লাটের ভূয়া দাবীদার সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন এর কাছে ফ্লাটের মালিকানার কাগজ দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হন। এ সময় সাংবাদিক নার্গিস জুঁই ফ্লাটের বৈধ কাগজপত্র দেখালে কাউন্সিলর তাৎক্ষণিক কাগজমূলে সাংবাদিক নার্গিস জুঁইকে ফ্লাটে থাকার নির্দেশ দেন এবং প্রতিপক্ষ ফ্লাটের ভূয়া দাবীদার সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন গংদের কোন প্রকার বিশৃংখলা না করতে নির্দেশ দেন।
জুঁই আরো জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমার স্বামী বলে তার ভাই মন্ঞ্জুর কে ফ্ল্যাট লিখে দিতে আমি বললাম আমার বাবার কেনা ফ্ল্যাট কেন লিখে দিব?
তখনই কথা কাটা কাটির এক পর্যাযে আমার স্বামী আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে আমাকে এলোপাথাড়ি কোপায় ও পিটায়। আমার ভাসুররা পাশের বিল্ডিং থেকে আমার স্বামীকে নির্দেশ ও হুকুম দিতে থাকে সাংবাদিক খুন করলে কিছুই হবে না । টাকা দিয়ে সব শেষ করে ফেলবো।কতো সাংবাদিক খুন হলো কিছুই হয়নি। ফ্ল্যাট লিখে দেয়ার জন্য কয়েক দিন পর পর ওরা আমার উপর হামলা করে । আমার চিৎকারের শত শত মানুষ দুরে দাঁড়িয়ে দেখেছে কিন্তু আমার ভাসুররা সন্ত্রাসী বলে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি ।
জুঁই আরো জানান, তারা মিথ্যা মামলা করে আমাকে হয়রানিসহ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে । আমি একজন নারী বলে তারা যখন তখন আমার উপর হামলা করে। অকথ্য নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে সাথে পুরো সাংবাদিক সমাজকে হেয়প্রতিপন্ন ও অসম্মান জন ভাষায় গালি গালাজ করে । আমার আত্মীয় স্বজন যারাই আমার সাথে সম্পর্ক রাখে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়েছে আমার ভাসুররা ।
তাদের বাসায় গিয়ে ভয় ভীতি দেখানো হয় আমার সাথে যেন কোন সম্পর্ক না রাখে । রাখলে অন্যদের মতো তাদের নামেও মিথ্যা মামলা করবে।জুঁই জানান আজকে ৪৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আরিফ হোসেন ছোটন জুঁইয়ের বাসায় সিংটোলা পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক লোটন সিকদার আসেন এবং বার বার বলেছেন কাউন্সিলর পাঠিয়েছেন জুঁই যেন মামলা না করে ,কাউন্সিলর সমাধান করে দিবে ।আমি একজন অসহায় নারী হয়ে আমি প্রশাসন,বিচার বিভাগ,আইনশৃংখলাবাহীনি সাংবাদিক সমাজ ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ন্যায় বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।